৫. ৩. ৪. ৭. এ সকল উপাস্য উপাসকদের ডাকে সাড়া দেয় না

কুরআন কারীমে বিভিন্ন স্থানে এ সকল উপাস্যের অসহায়ত্ব স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন:

إِنْ تَدْعُوهُمْ لا يَسْمَعُوا دُعَاءَكُمْ وَلَوْ سَمِعُوا مَا اسْتَجَابُوا لَكُمْ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يَكْفُرُونَ بِشِرْكِكُمْ وَلا يُنَبِّئُكَ مِثْلُ خَبِيرٍ

‘‘তোমরা তাদের ডাকলে তারা তোমাদের ডাক শুনে না এবং শুনলেও তোমাদের ডাকে সাড়া দেয় না। তোমরা তাদেরকে যে শরীক করেছ কিয়ামতের দিন তারা তা অস্বীকার করবে। সর্বজ্ঞের ন্যায় কেউই তোমাকে অবহিত করতে পারে না।’’[1]

মুশরিকগণ যাদের ডাকে তাদের সাড়া দেওয়ার অক্ষমতা বর্ণনা করে অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন:

لَهُ دَعْوَةُ الْحَقِّ وَالَّذِينَ يَدْعُونَ مِنْ دُونِهِ لا يَسْتَجِيبُونَ لَهُمْ بِشَيْءٍ إِلا كَبَاسِطِ كَفَّيْهِ إِلَى الْمَاءِ لِيَبْلُغَ فَاهُ وَمَا هُوَ بِبَالِغِهِ وَمَا دُعَاءُ الْكَافِرِينَ إِلا فِي ضَلالٍ

‘‘সত্যের আহবান তাঁরই (আল্লাহরই)। যারা তাকে ব্যতীত আহবান করে অপরকে, তাদেরকে কোনো সাড়াই দেয় না তারা। তাদের দৃষ্টান্ত সে ব্যক্তির মত, যে তার মুখে পানি পৌঁছাবে-এই আশায় তার হস্তদ্বয় প্রসারিত করে পানির দিকে, আর এভাবে কখনোই পানি তার মুখে পৌঁছাবে না। কাফিরদের দু‘আ- আহবান নিষ্ফল।’’[2]

অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন:

وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ يَدْعُو مِنْ دُونِ اللَّهِ مَنْ لا يَسْتَجِيبُ لَهُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَهُمْ عَنْ دُعَائِهِمْ غَافِلُونَ وَإِذَا حُشِرَ النَّاسُ كَانُوا لَهُمْ أَعْدَاءً وَكَانُوا بِعِبَادَتِهِمْ كَافِرِينَ

‘‘সে ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত কে যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কাউকে ডাকে যে কিয়ামত পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দিবে না? এবং তারা তার প্রার্থনা সম্বন্ধে অবহিতও নয়। যখন কিয়ামতের দিন মানুষকে একত্র করা হবে তখন তারা হবে তাদের শত্রু এবং তারা তাদের ইবাদত অস্বীকার করবে।’’[3]

এ বিষয়টিও মুশরিকদের সকল উপাস্যের বিষয়েই প্রযোজ্য। মুর্তি, প্রতিমা, ফিরিশতা, জিন্ন, নবী, ওলী ও অন্যান্য সকল মাবূদের ক্ষেত্রেই বিষয়টি সত্য। যারা আল্লাহকে ছেড়ে বিপদে আপদে ঈসা মাসীহ, ইবরাহীম, ইসমাঈল, উযাইর, জিবরাঈল, আযরাঈল (আলাইহিমুস সালাম) বা কোনো সত্যিকার ওলী বা মনগড়া আল্লাহর পুত্রকন্যা বা প্রতিমা লাত, মানাত বা অন্য কাউকে ডাকছে তাদের সকলের ক্ষেত্রেই এ কথা বলা হয়েছে। এ কথা মনে করার সুযোগ নেই যে, জিবরাঈল, ইসরাফীল, অন্য কোনো ফিরিশতা, নবীগণ বা ওলীগণকে ডাকলে হয়ত শুনতে পান। কাউকেই আল্লাহ কোনো অলৌকিক বা গাইবী শ্রবণের ক্ষমতা দেন নি। সবই মুশরিকদের কল্পনা মাত্র। সবচেয়ে বড় কথা যে, এরা কেউই তাদের অনুসারী বা ভক্ত নামধারীদের ভক্তি বা ইবাদতে খুশি নন এবং এদের জন্য কোনো সুপারিশ তাঁরা করবেন না।

[1] সূরা (৩৫) ফাতির: ১৪ আয়াত।
[2] সূরা (১৩) রা’দ: ১৪ আয়াত।
[3] সূরা (৪৬) আহকাফ: ৫-৬ আয়াত।